দুবাই থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর নিয়ম
বিদেশ থেকে ফোনে বিবাহ করার নিয়মপ্রিয় পাঠক বন্ধু, আপনি কি দুবাই থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন। কেননা আজকে আমরা দুবাই থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর সহজ নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
বিদেশ থেকে অনেক প্রবাসী ভাই-বোনেরা বাংলাদেশে টাকা পাঠিয়ে থাকে। বিশেষ করে অনেকেই প্রথম যখন দুবাই যায় তখন কিভাবে বাংলাদেশের টাকা পাঠাবে সে সম্পর্কে বুঝতে পারে না। আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়লে দুবাই থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর সকল পদ্ধতি গুলো জানতে পারবেন।
ভূমিকা
বর্তমানে বিদেশ বা দুবাই থেকে টাকা পাঠানোর অনেক মাধ্যম রয়েছে। আপনি চাইলে দুবাই থেকে বাংলাদেশে অনলাইন এর মাধ্যমেও টাকা পাঠাতে পারবেন। আগে সংযুক্ত আরব আমিরাত বা দুবাই থাকে টাকা পাঠাতে বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হতো। এমনকি টাকা পাঠাতে অনেক সময় লেগে যেত।
আবার অনেক সময় টাকা রেট কম পাওয়া যেত। আপনি যদি বিদেশ থেকে টাকা পাঠান তাহলে টাকা পাঠানোর খরচও আপনাকে বহন করতে হতো। কিন্তু বর্তমানে প্রবাসীদের জন্য একটি বড় সুখবর রয়েছে।
অনলাইনে অনেক ধরনের ওয়েবসাইট এবং অ্যাপ্লিকেশন পাওয়া যায় যার মাধ্যমে মাত্র কয়েকটি ক্লিকে বাংলাদেশের টাকা পাঠানো যায়। আজকে এমন পদ্ধতি সম্পর্কে জানাবো যার মাধ্যমে টাকা পাঠাতে আপনার তেমন কোনো খরচ হবে না, এমনকি আপনি বোনাস পাবেন।
আরও পড়ুন বেকার ভাতা অনলাইন আবেদন বাংলাদেশ
কিভাবে বোনাস পাবেন সে সম্পর্কে আর্টিকেলের শেষে বলবো। তা চলুন বেশি কথা না বলে মূল আলোচনা শুরু করা যাক।
দুবাই থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর নিয়ম
দুবাই থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর সবচেয়ে সহজ মাধ্যম হলো ট্যাপ ট্যাপ সেন্ড (Taptap Send) অ্যাপ্লিকেশন। এই অ্যাপ্লিকেশন এর মাধ্যমে কোনো রকম খরচ ছাড়াই আপনি দুবাই থেকে বাংলাদেশে ব্যাংকে, বিকাশে অথবা রকেটে টাকা পাঠাতে পারবেন।
এছাড়া প্রথম বার সেন্ট মানিতে পাচ্ছেন বিশাল অফার। কোনো রকম খরচ ছাড়াই দুবাই থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর নিয়ম নিচে ধাপে ধাপে বলা হলো:
প্রথমে গুগল প্লে স্টোরে প্রবেশ করে সেখানে সার্চ করুন "Taptap Send" লিখে। অথবা উক্ত লিংকে ক্লিক করেও আপনি সরাসরি ডাউনলোড করে নিতে পারবেন। ডাউনলোড করা হয়ে গেলে অ্যাপটি ওপেন করুন।
তারপর আপনার নাম, ঠিকানা ইত্যাদি প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সাইন আপ করুন এবং আপনি কোন দেশে আছেন সেটিও নির্বাচন করবেন। তারপর আপনি কত টাকা পাঠাবেন নির্ধারণ করুন নিচে দেওয়া ছবি দেখে।
তারপর আপনাকে ব্যাংক একাউন্টে যুক্ত করতে হবে এবং আপনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য অ্যাড্রেস ভেরিফিকেশন কমপ্লিট করতে হবে। নিচের ছবির মতো স্ক্রিন আপনার সামনে প্রদর্শিত হবে।
নিচের ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন আপনাকে এখন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সেট করতে হবে। তারপর আপনার আইডি এবং ইউজারনেম দিয়ে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সেট করে নিন। তারপর ভেরিফিকেশনের জন্য আপনাকে আরেকটি কাজ করতে হবে তা হলো আপনার আইডি কার্ড এর ছবি সেখানে দিতে হবে।
আইডির সামনে এবং পেছনের ছবি আপলোড করে সাবমিট করুন। এরপর টেক সেলফি নামের একটি অপশন পেয়ে যাবেন সেখানে ক্লিক করুন। তারপর আপনাকে একটি সেলফি তুলতে হবে। তারপর Next বাটনে ক্লিক করুন যতবার এই বাটনটি আসবে।
তাহলে আপনার অ্যাড্রেস ভেরিফিকেশন কমপ্লিট হয়ে যাবে এবং আপনার টাকা যেখানে পাঠিয়েছেন সেখানে দ্রুত পৌঁছে যাবে। এভাবে ট্যাপ ট্যাপ সেন্ড অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে খুব সহজেই দুবাই থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠাতে পারবেন।
দুবাই থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর পদ্ধতি
দুবাই থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর অনেক উপায় রয়েছে। বিভিন্ন উপায়ে টাকা পাঠালে ২.৫ শতাংশ রেমিট্যান্স ইনসেন্টিভ-ও পাবেন। আরও যেসব পদ্ধতিতে দুবাই থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠাতে পারবেন তাহলো:
- ব্যাংকের ট্রান্সফারের মাধ্যমে
- Xoom অ্যাপ
- পিপল অ্যাপ
- হাবপে অ্যাপ
- রেমিটলি ওয়েবসাইট এবং অ্যাপ
- ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন
সরকারি কোনো অ্যাপ অথবা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনি নিশ্চিন্তে দুবাই থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠাতে পারেন। থার্ড পার্টি কোনো প্ল্যাটফর্ম থেকে টাকা না পাঠানোই ভালো। তবে বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য অ্যাপ হলো ট্যাপট্যাপ সেন্ড। এটির মাধ্যমেও আপনি নিশ্চিন্তে আপনার আত্মীয় স্বজনদের কাছে টাকা পাঠাতে পারেন।
FAQ: দুবাই থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর নিয়ম সংক্রান্ত কিছু প্রশ্ন ও উত্তর
১. দুবাই থেকে বাংলাদেশে কোন কোন ব্যাংকে টাকা পাঠানো যায়?
উত্তর: বাংলাদেশে যতগুলো ব্যাংক রয়েছে প্রায় সব ব্যাংকেই দুবাই থেকে টাকা পাঠানো যায়। বাংলাদেশের জনপ্রিয় ব্যাংক গুলো হলো:
- ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ
- ডাচ বাংলা ব্যাংক
- ব্র্যাক ব্যাংক
- অগ্রণী ব্যাংক
- সোনালী ব্যাংক
- রূপালী ব্যাংক
২. দুবাই থেকে বাংলাদেশে টাকা পৌঁছতে কত সময় লাগে?
উত্তর: দুবাই থেকে বাংলাদেশে টাকা পৌঁছতে কত সময় লাগতে পারে সেটি নির্ভর করবে আপনি কোন মাধ্যমটি ব্যবহার করেছেন। বিভিন্ন অ্যাপ এবং ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অন্য অ্যাপে পাঠালে মাত্র কয়েক মিনিট অথবা কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই পৌঁছে যায়। এছাড়া ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠালে ১-৩ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
৩. দুবাই থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর জন্য কি কি ডকুমেন্ট প্রয়োজন হয়?
উত্তর: টাকা পাঠানোর জন্য যে সকল ডকুমেন্টস প্রয়োজন হয় তা হল পাসপোর্ট আইডি, প্রেরক এর মোবাইল নাম্বার, ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য, অনেক সময় ট্রেড লাইসেন্স প্রয়োজন হয়। এছাড়া বিভিন্ন মাধ্যমে টাকা পাঠাতে গেলে সেইসব মাধ্যমের নিয়ম অনুযায়ী আরও কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করার দরকার হতে পারে।
৪. ২.৫ শতাংশ রেমিট্যান্স ইনসেন্টিভ পেতে হলে কি কি করতে হয়?
উত্তর: ২.৫ শতাংশ রেমিট্যান্স ইনসেন্টিভ পেতে হলে আপনাকে বৈধ উপায়ে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট অথবা লাইসেন্সপ্রাপ্ত কোনো সার্ভিসের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে হবে। এছাড়া বিশেষ কোনো কাজ করতে হয় না।
আমাদের শেষ কথা
দুবাই থেকে যারা বাংলাদেশের টাকা পাঠাতে চাচ্ছেন তারা উপরোক্ত উপায় অনুসরণ করে সহজেই টাকা পাঠাতে পারেন। আর্টিকেলের শুরুতে আপনাদের কিছু বোনাসের কথা বলেছিলাম। আপনি যদি প্রথমবার ট্যাপট্যাপ সেন্ড এর মাধ্যমে বাংলাদেশের টাকা পাঠান তাহলে ১০০ দিরহাম পর্যন্ত বোনাস পাবেন।
এই বোনাস টি যাকে আপনি টাকা পাঠাবেন তিনি পাবেন। বোনাস পেতে হলে আপনাকে টাকা পাঠানোর সময় Promo code নামের একটি অপশন দেখতে পাবেন। সেখানে ক্লিক করে "EGALTUBE" এই কোডটি লিখুন। তারপর টাকা পাঠালে আপনি বোনাস পাবেন। তবে এটি কেবলমাত্র প্রথমবার ব্যবহার করলে পাবেন, পরবর্তীতে টাকা পাঠালে আর পাবেন না।
টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে কোনো অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করার পূর্বে আগে ভালোভাবে যাচাই বাছাই করুন। যখন টাকা পাঠাবেন তখন সঠিক তথ্য দিন, তা না হলে টাকা সঠিক জায়গায় পৌঁছাবে না। সম্মানিত পাঠক আপনি জানতে পারলেন দুবাই থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর নিয়ম এবং বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে।
আশা করি আর্টিকেলটি আপনার অনেক ভালো লেগেছে। এই আর্টিকেলটি অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করবেন যাতে তারাও বোনাস পেতে পারে। এছাড়া যে কোনো প্রশ্ন থাকলে নিচে কমেন্ট করতে পারেন, ধন্যবাদ।
অনলাইন ইনকাম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url